ইসরায়েল-মিসর ছাড়া সব দেশের জন্য মার্কিন সহায়তা বন্ধ
ইসরায়েল ও মিসর বাদে বিশ্বের আর কোন দেশকেই আর সহায়তা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। এই দুই দেশ বাদে অন্যান্য সব দেশের জন্য বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচির সব নতুন তহবিল বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দাতা দেশ হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও প্রায় সকল মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে ব্যতিক্রম হিসেবে ইসরায়েল ও মিসরে জরুরি খাবার ও সামরিক আর্থিক মার্কিন সহায়তা অব্যাহত রেখেছে দেশটি।
এ সংক্রান্ত একটি মেমোতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, বিদ্যমান বা নতুন সহায়তার বিষয়গুলো পর্যালোচনা এবং অনুমোদিত না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে অর্থ ছাড় দেওয়া হবে না। আগামী ৮৫ দিনের মধ্যে বিদেশি সহায়তার বিষয়গুলো রিভিউ করা হবে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘আমেরিকাই প্রথম’ নীতির অংশ এই উদ্যোগ।
এই আদেশের ফলে উন্নয়ন সহায়তা থেকে সামরিক সাহায্য পর্যন্ত সবকিছুই প্রভাবিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইউক্রেন রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জো বাইডেন প্রশাসন থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র সহায়তা পেলেও এবার তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
ট্রাম্প প্রশাসনের এ উদ্যোগে বিশ্বব্যাপী মানবিক সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের আশঙ্কা যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপী অস্থিতিশীলতা এবং জীবনহানির ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে।
এক বিবৃতিতে অক্সফাম আমেরিকার প্রধান ড. অ্যাবি ম্যাক্সম্যান বলেন, “বিদেশী উন্নয়ন সহায়তা স্থগিত করে, ট্রাম্প প্রশাসন সংকটে থাকা সম্প্রদায়ের জীবন ও ভবিষ্যতকে হুমকির মুখে ফেলছে। এছাড়া বিদেশী সহায়তা ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘকালের দ্বিপক্ষীয় দৃষ্টিভঙ্গি পরিত্যাগ করছে যা নির্বিশেষে প্রয়োজনের ভিত্তিতে মানুষকে সমর্থন করে।”
ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি)-এর সাবেক কর্মকর্তা জেরেমি কোনিন্ডিক বলেন, “এটা পাগলামি।
তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সাথে তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এটা মানুষকে হত্যা করবে। আমি বলতে চাচ্ছি, এটা বাস্তবায়িত হলে অনেক লোক মারা যাবে।”
২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ৬ হাজার কোটি ডলারের বেশি বৈদেশিক সহায়তায় ব্যয় করেছে, সামগ্রিকভাবে যা অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি। তবে এই সহায়তা মার্কিন সরকারের ব্যয়ের প্রায় ১ শতাংশের সমান।