ইসরায়েলি জিম্মির নতুন ভিডিও প্রকাশ, চাপে নেতানিয়াহু
ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস তাদের হাতে জিম্মি এক ইসরায়েলি তরুণীর সাড়ে ৩ মিনিটের ভিডিও প্রকাশ করেছে।
ফিলিস্তিনের গাজায় জিম্মি থাকা লিরি আলবাগ নামে ওই ইসরায়েলি তরুণীর ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাসের সশস্ত্র শাখা। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) নতুন এই ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়। ভিডিওটি ঠিক কবে ধারণ করা হয়েছে, তা যাচাই করা যায়নি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস কর্তৃক গাজায় নিয়ে যাওয়া ইসরাইলি জিম্মিদের ভিডিও প্রকাশের সর্বশেষ ঘটনা এটি।
ভিডিওতে ১৯ বছর বয়সি লিরি বলেছেন, তাকে ৪৫০ দিনেরও বেশি সময় ধরে আটকে রাখা হয়েছে। সাড়ে তিন মিনিটের ভিডিওটির তারিখ ছিল না। তবে ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের বলেই মনে করা হচ্ছে।
কাতারের দোহায় শুক্রবার থেকে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি নিয়ে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে পুনরায় আলোচনা শুরু হয়েছে। এমন সময়ে জিম্মির ভিডিও প্রকাশ করে ইসরায়েলি প্রশাসনের ওপর চাপ তৈরি করেছে হামাস।
লিলির বাবা-মা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সরকারের কাছে জিম্মিদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আবেদন করে বলেছেন, ‘মনে করুন আপনার সন্তানরাও সেখানে আছেন’।
এক বিবৃতিতে পরিবার বলেছে, হামাসের পাঠানো ভিডিওটি তারা দেখে নিশ্বাস নিতে পারছে না। এতে নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, লিরি বেঁচে আছে এবং তাকে আমাদের মধ্যে জীবিত ফিরিয়ে আনতে হবে। এটা শুধুমাত্র আপনার (নেতানিয়াহুর) উপর নির্ভর করে।
হামাসের হাতে আটক হওয়ার আগে লিরি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে নজরদারি করার দায়িত্বে কর্মরত ছিলেন।হামাসের হাজার হাজা যোদ্ধা যখন সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলে প্রবেশ করেছিল, লিরি তখন নাহাল ওজ সামরিক ঘাঁটিতে অবস্থান করছিলেন।
ওই সময় হামাসের তাৎক্ষণিক হামলায় ১৫ সেনা নিহত হয় এবং লিরিকেকে অন্য ছয়জনের সঙ্গে গাজায় অপহরণ করা হয়।
গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, এই হামলায় ১ হাজার ২০৭ জন নিহত হন।
২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস। এখন গাজায় জিম্মির সংখ্যা ৯৭। এর মধ্যে ৩৪ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে তাদের লাশ গাজায় রয়েছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে ইসরায়েল।গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, ইসরাইলের চলমান হামলায় সাড়ে ৪৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
এছাড়া আহত হয়েছেন ১ লাখের বেশি মানুষ।গাজার ২৩ লাখ লোকের বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং ক্ষুদ্র উপত্যকার বেশিরভাগই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
নেতানিয়াহু গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনা পুনরায় শুরু করার জন্য গত বৃহস্পতিবার একটি প্রতিনিধি দলকে অনুমোদন দিয়েছেন। তবে তিনি প্রকাশ্যে যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তির কথা অস্বীকার করে যাচ্ছেন।