ইয়েমেনের জব্দকৃত ইসরায়েলি জাহাজে মার্কিন বিমান হামলা
ইয়েমেনের জব্দকৃত ইসরায়েলের একটি পণ্যবাহী জাহাজে নতুন করে বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) লেবাননের আল-মায়াদিন টেলিভিশন চ্যানেল জানিয়েছে, মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলো ‘গ্যালাক্সি লিডার’ নামের জাহাজটিতে তিনটি বিমান হামলা চালায়। খবর প্রেস টিভি।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েল ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গণহত্যামূলক যুদ্ধ শুরু করার পরই ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী জাহাজটি দখল করে। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইয়েমেন বাহামাসের পতাকাবাহী এবং জাপানি পরিচালিত এই জাহাজটি জব্দ করে, যার মালিক একটি ব্রিটিশ কোম্পানি। কোম্পানিটির আংশিক মালিক ইসরায়েলি ধনকুবের আব্রাহাম (রামি) উঙ্গার।
২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর লোহিত সাগরে একটি হেলিকপ্টার অভিযানের মাধ্যমে ইয়েমেনি বাহিনী গ্যালাক্সি লিডার জাহাজটি জব্দ করে। পরবর্তীতে, ২০২৫ সালের ২২ জানুয়ারি, ইসরায়েল ও গাজাভিত্তিক প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে সমর্থন জানিয়ে ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ জাহাজের ২৫ নাবিককে মুক্তি দেয়।
শনিবারই ইয়েমেনের বিভিন্ন অঞ্চলে আরও বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। রাজধানী সানার উত্তরে বানি হারিস জেলাসহ একাধিক এলাকায় এই হামলা চালানো হয়। ইয়েমেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই হামলায় দুই শিশুসহ অন্তত আট বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন।
এছাড়া কামারান দ্বীপ, রাস ইসা তেলবন্দর, সানা’র আল-সাবিন এলাকা, সা’দা প্রদেশের কিতাফ ও আল-সালেম জেলা, আল-জাওফ প্রদেশের বারত আল-আনান এলাকা এবং মারিব প্রদেশের মেদঘাল জেলায়ও মার্কিন বিমান হামলা হয়েছে।
মার্কিন হামলার আগে ইয়েমেনি বাহিনী ইসরায়েলের তেল আবিব ও আশকেলোন শহরের দুটি কৌশলগত স্থাপনায় একযোগে পাল্টা ড্রোন হামলা চালায়। এছাড়া, মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান ও তার সহযোগী জাহাজগুলোতেও হামলা চালানো হয়।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র গত ১৫ মার্চ ইয়েমেনের ওপর তার প্রাণঘাতী হামলা অভিযান শুরু করে, যা ইসরায়েলের গাজায় হামলার জবাবে ইয়েমেনের অভিযানের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ। তবে সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর ওপর প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের মার্কিন সামরিক আক্রমণ বিশেষ কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।
আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ছয় সপ্তাহে ইয়েমেনি বাহিনী সাতটি মার্কিন রিপার ড্রোন ভূপাতিত করেছে, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতির পরিমাণ ২০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
ইয়েমেনি প্রেসিডেন্ট মাহদি আল-মাশাত সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, তার বাহিনী মিসাইল, বোমা কিংবা কৌশলগত বোমারু বিমানের হামলায় নিরুৎসাহিত হবে না। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে বলেছেন, তিনি একটি কৌশলগত দুঃস্বপ্নের মধ্যে পা দিয়েছেন।