ইউক্রেনে রাশিয়ার যেকোনও কাজের প্রতি নিঃশর্ত সমর্থনের ঘোষণা কিমের
ইউক্রেনে রাশিয়ার যেকোনও কাজের প্রতি নিঃশর্ত সমর্থনের ঘোষণা দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির নেতা কিম জং উন জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়া যে কোনো পদক্ষেপ নিক, পিয়ংইয়ং তাতে ‘নিঃশর্তভাবে সমর্থন’ দেবে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের উত্তর কোরিয়া সফরে এই বার্তা দেন কিম। চলমান তিন দিনের সফরে দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের কৌশলগত আলোচনা হয়েছে। রোববার (১৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তিসহ সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্ব চুক্তি রয়েছে। এটি গত বছর স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সেই ভিত্তিতেই ল্যাভরভ ও উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো সন হুই দ্বিতীয় দফা কৌশলগত সংলাপ করেছেন।
এছাড়া ওনসান শহরে কিম ও ল্যাভরভের করেছেন। বৈঠকে কিম বলেন, বৈশ্বিক ভূরাজনীতিতে দ্রুত পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে দুই দেশের যৌথ পদক্ষেপ “বিশ্বব্যাপী শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে”।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা কেসিএনএ জানায়, কিম বলেছেন, “ইউক্রেন সংকটের মূল কারণ নিরসনে রুশ নেতৃত্ব যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, আমরা তা নিঃশর্তভাবে সমর্থন ও উৎসাহ দেব।”
এদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে কিম ও ল্যাভরভকে হাত মেলাতে ও আলিঙ্গন করতে দেখা গেছে। বৈঠকে কিম আরও বলেন, তিনি “বিশ্বাস করেন রুশ সেনা ও জনগণ নিশ্চয়ই বিজয় অর্জন করবে, কারণ তারা দেশের মর্যাদা ও মৌলিক স্বার্থ রক্ষায় পবিত্র লড়াই করছে।”
কেসিএনএ জানায়, বৈঠকে ২০২৪ সালের জুনে রাশিয়া-উত্তর কোরিয়ার মধ্যকার ঐতিহাসিক শীর্ষ সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে।
আল জাজিরা বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত দুই বছরে উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার সম্পর্ক নাটকীয়ভাবে ঘনিষ্ঠ হয়েছে। পিয়ংইয়ং ইতোমধ্যেই ১০ হাজারের বেশি সেনা ও অস্ত্র সরবরাহ করেছে রাশিয়াকে এবং ভবিষ্যতে আরও সামরিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
গত বছর ভ্লাদিমির পুতিনের বিরল উত্তর কোরিয়া সফরে দুই দেশ একটি সামরিক চুক্তি সই করে। ওই চুক্তিতেও পারস্পরিক প্রতিরক্ষা ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
এদিকে চলমান সফরে কিমকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ জানান, প্রেসিডেন্ট পুতিন “খুব শিগগিরই সরাসরি আবার দেখা করতে চান”। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা তাস-এর বরাত দিয়ে এই তথ্য জানানো হয়।
এই সফরের আগে রাশিয়া ঘোষণা দেয়, তারা মস্কো ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে সপ্তাহে দুইদিন ফ্লাইট চালু করবে। ওনসান শহরকে “ভবিষ্যতের পর্যটন আকর্ষণ” হিসেবে উল্লেখ করে ল্যাভরভ বলেন, “আমরা আশা করি, এই এলাকা শুধু স্থানীয়দের নয়, রাশিয়ান পর্যটকদের কাছেও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।”