April 21, 2025
আন্তর্জাতিকলেটেস্ট

আসামে বজরং দলের অস্ত্র প্রশিক্ষণশিবির নিয়ে উত্তেজনা

ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের যুব শাখা রাষ্ট্রীয় বজরং দলের অস্ত্র প্রশিক্ষণকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে আসামের রাজনীতি। বিজেপিশাসিত রাজ্য আসামের পুলিশ খানিকটা বাধ্য হয়েই হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার একটি মামলা করেছে।

আসাম বিধানসভায় কংগ্রেসের নেতা দেবব্রত শইকীয়া মধ্য-পশ্চিম আসামের দরং জেলায় বজরং দলের অস্ত্র প্রশিক্ষণশিবিরের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে চিঠি লেখেন। বিষয়টি নিয়ে বিরোধী কংগ্রেস রাজ্যে কথা বলতে শুরু করলে আসাম পুলিশ মামলা করতে বাধ্য হয়। কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানেই এমন একটি অস্ত্র প্রশিক্ষণশিবির করা হয়েছে।

বজরং দল প্রশিক্ষণ চালাচ্ছিল দরং জেলার মঙ্গলদৈ সমষ্টির মহর্ষি বিদ্যামন্দির স্কুলে। ৩১ জুলাই একটি ভিডিও চিত্র প্রকাশ্যে আসে, যেখানে দেখা যায় স্থানীয় তরুণদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বজরং দলের ওই শাখা। পাঁচ দিন ধরে চলা এই শিবিরে রাজ্যের ২৮ জেলার ৩৫০ তরুণ অংশ নেয় বলে বজরং দলের কর্মকর্তারাই ভিডিওতে জানিয়েছেন।

আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও প্রশিক্ষণশিবিরে অস্ত্র ছাড়া কীভাবে লড়াই করতে হবে, তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। লাঠিসহ অন্যান্য ছোটখাটো হাতিয়ার নিয়ে কীভাবে লড়তে হবে, তারও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেখানে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বলেও আসামের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় জানানো হয়েছে।

অস্ত্র প্রশিক্ষণের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে দেবব্রত শইকীয়া লেখেন, ‘২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এই ধরনের অস্ত্র প্রশিক্ষণশিবিরের বিষয় সামনে এসেছে। এই ঘটনা যে প্রথম ঘটল, এমন নয় এবং এ ব্যাপারে আমাদের দল প্রতিবাদ করেছে।’

উল্লেখ্য, আসামে যেদিন সশস্ত্র প্রশিক্ষণের ঘটনা সামনে আসে, সে দিনই আসামে এক পরিবারের তিনজনের হত্যার ঘটনাও প্রকাশ্যে আসে। সেই ঘটনার তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ঘটনাটিকে ‘লাভ জিহাদ’ বলে চিহ্নিত করেন। ভারতে কোনো ঘটনাকে ‘লাভ জিহাদ’ বলে তখনই চিহ্নিত করা হয়, যখন মনে করা হয় ইসলাম ধর্মের কোনো তরুণ কোনো হিন্দু নারীর ধর্ম পরিবর্তন করিয়েছেন এবং তাঁকে বিবাহ করেছেন।

বিরোধীরা মনে করছেন, হিমন্ত বিশ্বশর্মা কয়েক দিন ধরে ‘লাভ জিহাদের’ প্রসঙ্গটিকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে তাঁর বক্তব্যে টেনে আনছেন, যাতে অস্ত্র প্রশিক্ষণের বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে। বিজেপি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, অস্ত্র প্রশিক্ষণের বিষয়টি সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অস্ত্র প্রশিক্ষণশিবিরটি জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে হয়েছে বলেও কংগ্রেস অভিযোগ করেছে। ভারতের আধা সামরিক বাহিনী সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের এক অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিকের তত্ত্বাবধানে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলেও স্থানীয় প্রচারমাধ্যমে খবর বের হয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

শেয়ার করুন: