আল্লাহকে সাক্ষী রেখে শপথ করলেন নির্বাচন কর্মকর্তারা
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার বিষয়ে হাত তুলে আল্লাহকে সাক্ষী রেখে শপথ করতে নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে সারা দেশের কর্মকর্তারা হাত তুলে শপথ করেন।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি এ শপথ করান।
সিইসি বলেন, আমি পরিবারের প্রধানের জায়গায় থেকে দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করি। বাংলাদেশের মতো জায়গায় কাজ করা খুব কঠিন। আমরা অনেক দেখা, অদেখা বহু চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছি। অনেকগুলো দেখা যায়। অনেকগুলো দেখ যায় না। আমি পজিটিভ মানুষ। গ্লাসে আমি সব সময় অর্ধেক ভরা পানি দেখি।
তিনি বলেন, আমাদের ওপর আস্থা আছে বলেই প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলছেন ঐতিহাসিক নির্বাচন করব। আমরা অনুরাগ, বিরাগের বশবর্তী না হয়ে, আইন মেনে কাজ করব। অন্যায় নির্দেশনা দেবো না। বেআইনি নির্দেশনা, কারো পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেবো না। সঠিক কাজটি সঠিকভাবে করার নির্দেশনা দেবো।
সিইসি বলেন, আপনারা কারো পক্ষে কাজ করবেন না। কোনো দলের পক্ষে কাজ করবেন না। একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে নির্বাচন হচ্ছে। বিশেষভাবে, বিশেষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই কাজ করতে হবে। আমাদের শপথ রক্ষা হবে আপনাদের ভূমিকার ওপর।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ মনির হোসেন। এ সময় নির্বাচন কমিশন সচিব ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার এবং ইসি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মনির হোসেন প্রবাসে দূতাবাসের মাধ্যমে ভোটার কার্যক্রমে ইসি কর্মকর্তাদের নিয়োগের দাবি জানান। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মাধ্যমে অপপ্রচার রোধে মাঠ পর্যায়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতামূলক কর্মসূচি নেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।
মনির হোসেন বলেন, এআই নির্ভর মিসইনফরমেশন, ডিজইনফরমেশন বা ম্যালইনফরশেনের ক্ষেত্রে সাধারণত একটি নির্দিষ্ট এইজ গ্রুপ জড়িত থাকে। বিশেষ করে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাই তাদের নিয়ে আমরা ওয়ার্কশপ করতে পারি। প্রশাসনিক শৃঙ্খলা রক্ষায় বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পদের আপগ্রেডেশন প্রয়োজন। একজন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার পদ যদি অন্যান্য দপ্তরের চেয়ে পদমর্যাদায় কম হয় তাহলে প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনারদের পদমর্যাদা আরও উন্নীত করা প্রয়োজন। এতে মন্ত্রী পর্যায়ের সঙ্গে ইসির যোগাযোগ সহজ হবে। নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার পদে ইসি কর্মকর্তাদের নিয়োগ এবং আচরণ বিধি প্রতিপালনে ইসি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিলে বিষয়টি আরও সহজ হবে।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক আশফাকুর রহমান বলেন, কমিশন যদি মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়ায় আমরা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও মেরুদণ্ড সোজা হয়ে দাঁড়াব। আমাদের সংকট শুধু আস্থার। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে হারানো আস্থাকে পুনরুদ্ধার করতে চাই। গত তিনটি নির্বাচনের মতো নির্বাচন করতে চাই না।