‘আমরা গত ১৬ বছর ভুলে গিয়ে তিন মাসের পেছনে লেগেছি’
আওয়ামী লীগের কর্মসূচি প্রতিহত করতে ডাকা গণজমায়েতে শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আমরা গত ১৬ বছর ভুলে গিয়ে তিন মাসের পেছনে লেগেছি।’ এ সময় আন্দোলনের শহীদ ও আহতদের আত্মত্যাগের কথা গণমাধ্যমে তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি।
রোববার (১০ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে গণজমায়েত’ ব্যানারে সমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানান। ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধের এই সমাবেশে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।
শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা গত ১৬ বছর ভুলে গিয়ে তিন মাসের পেছনে লেগেছি।’ এ সময় আন্দোলনের শহীদ ও আহতদের আত্মত্যাগের কথা গণমাধ্যমে তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি।
আন্দোলনের পরিপূর্ণ ফল ঘরে তুলতে সারজিস আলম সুশীল সমাজকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ১৬ বছরের অপকর্মের কথাগুলো বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে সুশীল সমাজকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও বিচারের মাধ্যমে তাদের রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করার দাবি জানিয়েছে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ মঞ্চ। বক্তারা আরও বলেন, আওয়ামী লীগকে বিচার করতে হবে, যাতে কোনো ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, আমরা নূর হোসেনকে ধারণ করে জুলাই বিপ্লব করেছি। কিন্তু আওয়ামী লীগ ইতিহাস ধ্বংস করেছে।
উমামা ফাতেমা আরও বলেন, আমরা যখন রাষ্ট্র গঠনের জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করছি, তখন দিল্লি বসে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমরা বর্তমান সরকারকে বলতে চাই, এই আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিচার করতে হবে। এমন বিচার করতে হবে, যা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে। যাতে কেউ মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে।
কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম বলেন, স্বৈরাচারের জননী দিল্লি বসে ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশের রাজনীতির বড় একটি দিক দিল্লি কেন্দ্রিক, তাই আমরা স্লোগান দেই, ‘দিল্লি না ঢাকা’। এই আলোচনা সব সময় থাকবে।
পরে গণজমায়েতে সারজিস আলম ‘হ’ দিয়ে একটি লেখা পড়ে শোনান।
পাঠকদের জন্য তা হুবহু তুলে ধরা হলো-
সে এক যুগ ছিলো ভাই।
স্বর্ণ যুগ যাকে বলে।
প্রত্যেক যুগের আলাদা আলাদা নাম থাকে।
সেই যুগের নাম ছিলো – ‘হ’ যুগ।
সব কিছুতেই ‘হ’।
উপ্রে, নিচে, ডাইনে বায়ে, যেখানে তাকাবেন- ‘হ’, ‘হ’ আর ‘হ’।
নেত্রীর নাম ‘হ’ দিয়ে ছিলো তো বটেই।
বাহিনীরও নাম ছিলো- হেলমেট বাহিনী।
তাদের হাতে হাতুড়ি।
হাতুড়ি না থাকলে হকিস্টিক।
‘হ’ এর বাইরে এরা যায় নাই।
‘হ’ ভাই, আসলেই যায় নাই।
এমনকি সেই ‘হ’ যুগে দেশের সবচেয়ে বিখ্যাত হোটেলের নামও হ দিয়ে।
হারুনের ভাতের হোটেল।
এই হোটেলে যারা খেতো, তারা তো খেতোই।
হোটেলে খাওয়ার সুযোগ না পাওয়া পাবলিকরা যা খেতো- তার সবচেয়ে পরিশীলিত নাম
হতে পারে- ‘হ’ মারা খাওয়া।’
‘হ’ যুগে পত্রপত্রিকা, টিভি ফিভি বলে কিছু ছিলো না।
যা ছিলো তার নামও ‘হ’ দিয়ে। হলুদ সাংবাদিকতা।
এর বাইরে হিংসা, হানাহানি, হুমকি, হুংকার, হত্যা -এসব ছোটখাটো ‘হ’ এর দাপট তো ছিলোই।
১৫ বছর পর ‘হ’ যুগের সমাপ্তি ঘটলো।
‘হ’ পালিয়ে গেলেন। যে বাহনে করে পালালেন, তার নামও ‘হ’ দিয়ে । হেলিকপ্টার।
‘হ’ দিয়ে শুরু, ‘হ’ দিয়ে শেষ। আমি ভাবলাম, যাক ‘হ’ যুগের অবসান হলো তাহলে।
হায়, কিন্তু কীসের কি।
এখন আবার নতুন করে ‘হ’ এর হাহাকার শুরু হয়েছে চারিদিকে ‘হ’ এর হাউকাউ।
নতুন ‘হ’ যুগ শুরু হয়েছে এভাবে- হ্যালো আপা, হ্যালো, হ্যালো, আপা, আপা, হ্যালো হ্যালো হ্যালো।
হ্যালো আপা, জ্বী বলেন, হ্যালো, আপা, আপা, হ্যালো হ্যালো …