আইন পাল্টাল মোদির সরকার, আদানির বিদ্যুৎ ভারতে সরবরাহের অনুমতি
ভারতের সরকার আকস্মিকভাবে বিদ্যুৎ রপ্তানির আইনে সংশোধন আনায় বাংলাদেশের জন্য নির্ধারিত পুরো বিদ্যুৎ এখন ভারতে সরবরাহ করবে ভারতীয় ব্যবসায়ী গৌতম আদানির মালিকানাধীন বিদ্যুৎ কোম্পানি আদানি পাওয়ার। গৌতম আদানির মালিকানাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে বলে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার দেশটির বিদ্যুৎ রপ্তানি বিধিতে সংশোধনী এনেছে। এর ফলে আদানির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এখন দেশীয় বাজারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে। কিন্তু আগের চুক্তি অনুযায়ী, আদানির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদিত পুরো বিদ্যুৎ বাংলাদেশে রপ্তানির শর্ত ছিল।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স ১২ আগস্ট ভারতের কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের একটি স্মারক দেখতে পেয়েছে। ওই স্মারকে প্রতিবেশী একটি দেশে আদানির একচেটিয়া বিদ্যুৎ সরবরাহের ২০১৮ সালের বিধিতে সংশোধনী আনা হয়েছে।
বর্তমানে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গোড্ডা জেলায় আদানি পাওয়ারের এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুতের শতভাগ বাংলাদেশে রপ্তানির চুক্তি রয়েছে।
স্মারকে বলা হয়েছে, ‘‘ভারত সরকার অভ্যন্তরীণ বাজারে বিদ্যুৎ বিক্রির সুবিধার্থে ভারতীয় গ্রিডে এই জাতীয় উৎপাদন কেন্দ্রের সংযোগের অনুমতি দিতে পারে। আর এটা নন-শিডিউলিং ক্ষেত্রে পূর্ণ বা আংশিক সক্ষমতায় ব্যবহার করা হতে পারে।’’
এতে আরও বলা হয়েছে, অর্থপ্রদানে বিলম্ব হলে স্থানীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিক্রির অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার প্রায় এক সপ্তাহ পর এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে দিল্লি। এর ফলে ভবিষ্যতের সব প্রকল্পেও এর প্রভাব পড়তে পারে।
এই বিষয়ে আদানি গ্রুপের একজন মুখপাত্রের তাৎক্ষণিক মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। তবে দেশটির বিদ্যুৎ শিল্পের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেছেন, বিদ্যুৎ সুরক্ষাসহ ভারতীয় স্বার্থ রক্ষাই এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য।
বিষয়টি সম্পর্কে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়ে ভারতীয় ওই কর্মকর্তা বলেছেন, যদি একটি প্ল্যান্টের উৎপাদন ক্ষমতা নিষ্ক্রিয় থাকে এবং দেশে বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়, তাহলে আপনি কেন স্থানীয় গ্রিডে সরবরাহ বন্ধ রাখবেন? ভারতীয় ব্যাংকগুলোও এর জন্য অর্থ প্রদান করে।