November 24, 2024
খেলাধুলালেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জয়ী রিজওয়ানকে নিয়ে গর্বিত পঞ্চগড়বাসী

বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে টাইগার যুবারা প্রথমবারের মতো অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জয়ী হওয়ায় সারাদেশে খুশির আমেজ চলছে। চ্যাম্পিয়ন দলের অন্যতম সদস্য চৌধুরি মোহাম্মদ রিজওয়ান। ফাইনাল ম্যাচে ব্যাট হাতে তিনি দিয়েছেন নির্ভরতার প্রতিদান। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ফাইনালে রিজওয়ানের ইনিংস ছিল ৬০ রানের। যা ম্যাচে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত। আসরজুড়ে ৮৪ স্ট্রাইকরেটে ১২৭ রান করেছেন রিজওয়ান। একই সাথে বল হাতে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ব্যাট ও বল হাতে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের ছেলে রিজওয়ানের এই অলরাউন্ড পারফরম্যান্স শিরোপা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

জানা যায়, দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার পামুলী ইউনিয়ন থেকে জাতীয় পর্যায়ে উঠে এসেছেন রিজওয়ান। যুব দলের হয়ে এর আগেও প্রমাণ করেছেন নিজেকে। এবার বড় মঞ্চে, স্নায়ু চাপের ফাইনালে দেখালেন নিজের বীরত্ব৷ যুবাদের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে খুশির জোয়ার বইছে পুরো দেশে। একই সাথে রিজওয়ানকে নিয়ে গর্বিত উত্তরের এই প্রান্তিক জেলার সর্বস্তরের মানুষ। রিজওয়ানকে অভিনন্দন জানানোর হিড়িক পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

পঞ্চগড়বাসী রিজওয়ানকে নিয়ে গর্বিত। একই সাথে তার সুন্দর ভবিষ্যত নিয়েও আত্মবিশ্বাসী অনেকেই। তরুণ এই অলরাউন্ডারের ছোট বেলার খণ্ডকালীন কোচ সাজু ইসলাম বিশ্বাস করেন, এক দিন জাতীয় দলের হয়ে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করবেন রিজওয়ান।

২০১৬ সালে রিজওয়ানের ক্রিকেট চর্চায় সঙ্গী ছিলেন দেবীগঞ্জ উপজেলার ক্রিকেটার সাজু ইসলাম। রিজওয়ানকে দেখা হয়েছে খুব কাছে থেকে। তিনি বলেন, ‘আমি যতটা কাছে থেকে দেখেছি, সে পরিশ্রমে বিশ্বাসী একজন ক্রিকেটার। পরিশ্রমে বিশ্বাসী বলেই সে চাপ কাটাতে পেরেছে। তার ক্রিকেটীয় শক্তির জায়গা হলো ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংও করতে পারে। রিজওয়ান আমাদের পঞ্চগড় জেলার গর্ব, নিশ্চয়ই সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সে একদিন জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করবে।’

এশিয়া কাপ জয়ী রিজওয়ানের সাফল্যে খুশি তার পরিবারের সদস্যরা। তাই বাড়িতে চলছে উৎসবের আমেজ।

রিজওয়ানের বাবা চৌধুরী মোঃ তানভীর যোবায়ের হোসেন বলেন, ‘রিজওয়ানের সাফল্যে আমরা আনন্দিত। ওকে আমি বেশি সময় দিতে পারিনি, তার সাফল্যের পিছনে সব থেকে বেশি অবদান ওর মায়ের। এছাড়া ক্রিকেট একাডেমির শিক্ষকদের সহযোগিতা এবং দিকনির্দেশনায় আজ সে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারতেছে। জানুয়ারিতে রিজওয়ানের যুব বিশ্বকাপ। সে যেন সফলতার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বাংলাদেশের সম্মান অক্ষুন্ন রাখতে পারে সকলের কাছে এই দোয়া চাই।

রিজওয়ানকে নিয়ে দেবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘দেবীগঞ্জ উপজেলার কৃতি সন্তান শরিফুলের পরে রিজওয়ান বাংলাদেশের হয়ে বিশ্ব দরবারে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। একই উপজেলা এবং একই জেলা থেকে দুইজন ক্রিকেটার বাংলাদেশের হয়ে খেলতেছে যা সত্যি অভাবনীয়। আমরা প্রত্যাশা করছি রিজওয়ান সামনে জাতীয় দলেও জায়গায় করে নিবে এবং বাংলাদেশের ক্রিকেটকে ভালো কিছু উপহার দিবে। রিজওয়ানের জন্য শুভকামনা রইল।’

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের যুব বিশ্বকাপ জয়ী বাংলাদেশ দলের সদস্য ছিলেন এই জেলার শরিফুল ইসলাম। চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার হওয়ার পর তার নামের পাশে যুক্ত হয়েছিল ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’ খ্যাতি। বিশ্বকাপ জয়ে পঞ্চগড়বাসীর স্বপ্নকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল শরিফুল। ফলে জেলা জুড়ে তাকে নিয়ে ছিল উচ্ছ্বাস।

এরপর জেলার মানুষের মনে তৈরি হয়েছিল নতুন এক আকাঙ্ক্ষা। কে হবেন পরবর্তী ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’, এমন কথা ছিল জনমুখে। সেসময় পঞ্চগড় থেকে উঠে আসা যে কয়েকজন ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’ হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিল তাদের একজন চৌধুরি মোহাম্মদ রিজওয়ান। বছর তিনেকের মাথায় সে এখন এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন।

শেয়ার করুন: