অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড খেলে নষ্ট হতে পারে স্মৃতিশক্তি, বলছে গবেষণা
ব্যস্ততায় ভরপুর জীবনে ফাস্ট ফুড হয়ে গেছে নিত্যদিনের সঙ্গী। রান্নাবান্নায় সময় নষ্ট না করে অনেকেই বার্গার বা পিৎজা খেয়ে দিন কাটিয়ে দেন। কোথাও ঘুরতে গেলেও জাঙ্ক ফুড হয় সঙ্গী। তবে বাইরের এসব খাবার যে কেবল আপনার পেটের ক্ষতি করছে তা নয়। কমিয়ে দিচ্ছে স্মৃতিশক্তিও। সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের গবেষকরা তাদের নতুন গবেষণায় এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড কেবল স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় না, এটি স্মৃতিশক্তির সমস্যারও কারণ হতে পারে।
ডক্টর ডাবলু টেলার কিম্বার্লির নেতৃত্বে এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে নিউরোলজিতে। গবেষণায় দেখা গেছে, অতি প্রক্রিয়াজাত খাবারের উচ্চমাত্রায় গ্রহণ শরীরের একাধিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এর আগে গবেষণায় জানা গিয়েছিল, জাঙ্ক ফুড স্থূলতা, কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ এবং ডায়াবেটিসের সমস্যা বাড়ায়। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে স্মৃতিশক্তিজনিত সমস্যাও।
ডক্টর কিম্বার্লি বলেন, ‘আমাদের গবেষণা থেকে জানা গেছে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের মাত্রা যে খাবারে বেশি সেই খাবারগুলো মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে কোন খাদ্য বা কোন প্রক্রিয়াজাত উপাদান মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের ওপর বেশি প্রভাব ফেলে তা জানার জন্য আরও বেশি গবেষণা প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদিও এই অধ্যায়নটি অতি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য গ্রহণের সঙ্গে চোখের ঝুঁকি বা স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার মধ্যে কোন সম্পর্ক প্রমাণ করেনি তবে বয়সের সাথে সাথে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যের গুরুত্ব যে অপরিসীম তা এই গবেষণা থেকে থেকে বোঝা গেছে।’
গবেষণায় দেখা যায়, আলট্রা প্রসেসড খাবার বেশি গ্রহণ করার কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল, কিন্তু যখনই অংশগ্রহণকারীরা জাঙ্ক ফুড খাওয়ার পরিমাণ ১০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয় তখনই স্মৃতিশক্তি হ্রাসের ঝুঁকি বেড়ে ১৬ শতাংশে উপনীত হয়। অন্যদিকে অপ্রক্রিয়াজাত খাবার বা ন্যূনতম প্রক্রিয়া জাতীয় খাবার খাওয়ার কারণে স্মৃতিশক্তি হ্রাসের ঝুঁকি কমে যায় ১২ শতাংশ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায় ৯ শতাংশ।
অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার কোনগুলো?
যেসব খাবার তৈরির সময় তার স্বাদ ও টেক্সচার বাড়ানোর জন্য মেশিনের ব্যবহার করা হয় তাদের অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবার বলে। এই প্রক্রিয়ায় যখন খাবার তৈরি হয় তখন খাবারে থাকা ফাইবার, প্রোটিন ও খনিজ নষ্ট হয়ে যায়। অতি প্রক্রিয়াজাত খাবারের তালিকায় রয়েছে আলুর চিপস, সোডা, এনার্জি ড্রিংক্স, চিকেন নাগেটস, ইনস্ট্যান্ট স্যুপ মিক্স, কেচাপ এবং আরও অনেক কিছু।