পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল রেকর্ড ৮ কোটি ২১ লাখ টাকা
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স (সিন্দুক) থেকে পাওয়া ২৯টি বস্তার টাকা গণনা করে ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা পাওয়া যায়। এ ছাড়াও স্বর্ণ ও রূপাসহ বেশ কিছু বৈদেশিক মুদ্রাও পাওয়া গেছে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর গণনা শেষে দানের টাকার এ হিসাব পাওয়া যায়।
এর আগে শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স (সিন্দুক) ও দুটি ট্রাঙ্ক খোলা হয়।
এরপর শুরু হয় দিনব্যাপী টাকা গণনার কাজ এবং সন্ধ্যার পর টাকা গণনা শেষ হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন-কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান, কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যসহ আরও অনেকেই।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
টাকা গণনা কাজে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রুবেল মাহমুদ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিজাবে রহমত, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এরশাদ মিয়া, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) রওশন কবীর, রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলামসহ ব্যাংকের ৭৫ জন স্টাফ, মাদরাসার ২৮৫ জন ছাত্র, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশ নিয়েছেন।
এছাড়াও সার্বিক তদারকি ও নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন প্রশাসন ক্যাডারের ৯ জন কর্মকর্তা, ১০ জন সেনা সদস্য, ১৬ জন পুলিশ সদস্য ও ৯ জন আনসার সদস্য।
সাধারণত তিন মাস পর পর পাগলা মসজিদের দানবাক্স (সিন্দুক) খোলা হয়। এবার তিন মাস ১৪ দিন পর মসজিদের দানবাক্স (সিন্দুক) খোলা হয়েছে। টাকা গণনা শেষে এবার ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা পাওয়া যায়। এছাড়াও দানকৃত গবাদি পশু ও অন্যান্য সামগ্রী নিলামে বিক্রি করে টাকাগুলো মসজিদের অ্যাকাউন্টে জমা রাখা হয়।
এর আগে, সর্বশেষ চলতি বছরের ১৭ আগস্ট মসজিদের দান বাক্স (সিন্দুক) খুলে গণনা করে ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা পাওয়া যায়। এ ছাড়াও স্বর্ণ ও রূপাসহ বেশ কিছু বৈদেশিক মুদ্রাও পাওয়া গেছে।
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে আনুমানিক চার একর জায়গায় ‘পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স’ অবস্থিত। প্রায় আড়াইশ বছর আগে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয় বলে ইতিহাস সূত্রে জানা যায়। এই মসজিদের প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনেক কাহিনী প্রচলিত আছে, যা ভক্ত ও মুসল্লিদের আকর্ষণ করে।
সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশ্বাস রয়েছে, এখানে মানত করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। আর এ কারণেই মূলত দূর-দূরান্তের মানুষও এখানে মানত করতে আসেন।