April 23, 2024
জাতীয়

যেই আমার ছেলেকে মেরেছে তার বিচার চাই : তুহিনের মা

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

‘আমার স্বামী এ ধরনের কাজ করবে তা বুঝতেই পারিনি। আমি মেনেই নিতে পারছি না যে তিনি এ কাজ করবেন’। হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশু তুহিনের মা সাংবাদিকদের কাছে ছেলে হত্যার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে একথা বলেন। গতকাল বুধবার দুপুরে দিরাইয়ের জকি নগর গ্রামে তার বাবার বাড়িতে ১৭ দিনের বয়সী মেয়ে কোলে নিয়ে কথা বলছিলেন মনিরা বেগম।

এক প্রশ্নে জবাবে মনিরা বেগম বলেন, তার সঙ্গে (স্বামী) আমার ছেলে দুই বছর ধরে ঘুমাচ্ছে। আমি তো জানি না কে বা কারা আমার ছেলেকে মেরেছে। মানুষ যা বলছে এখন আমাকে তাই বিশ্বাস করেত হবে। তারপরও আমার মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। যেই আমার ছেলেকে মেরেছে আমি তার বিচার চাই।

এ মামলার অপর আসামি নাসিরের সঙ্গে তার স্বামীর কেমন সম্পর্ক ছিল জানতে চাইলে নিহত শিশু তুহিনের মা বলেন, তারা তো দেখছি ভাই-ভাই হেসেবে মিলমিশ করে চলতো। এর বাইরে কী ছিল তা তো জানা নেই। কার মনে কী আছে বলবো কেমন করে।

এর আগে সোমবার ভোরে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের খেজাউড়া গ্রামে তুহিন মিয়া নামে পাঁচ বছরের এক শিশুর কান, লিঙ্গ ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত শিশুর মা বাদী হয়ে দিরাই থানায় মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, পূর্ববিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে তুহিনের বাবা বাছির মিয়া, তার চাচা জমশেদ আলী, মোছাব্বির আলী, নাছির উদ্দিন, চাচাতো ভাই শাহরিয়র হোসেন গলা, কান ও গোপনাঙ্গ কেটে তাকে হত্যা করে। হত্যার পর তুহিনের পেটে দু’টি ছুরি ঢুকিয়ে পাশের একটি মসজিদের কাছে কদম গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে তারা। প্রথমে পরিবারের লোকজন কিছুই জানে না বলে পুলিশ ও এলাকাবাসীকে বলে। কিন্তু ওইদিন দুপুরে কোনো প্রপার ক্লু না পেয়ে তুহিনের পরিবারের ৭ জনকে আটক করে দিরাই থানায় নিয়ে যায়। পরদিন পাঁচজনকে সুনামগঞ্জ আদালতে হাজির করা হয়। আর তুহিনের চাচি খাইরুন নেছা ও চাচাতো বোন তানিয়াকে ছেড়ে দেওয়া হয়। একইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দু’টি ছুরির মধ্যে আনোয়ার মেম্বরের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত ছালাতুল ও সোলেমানের নাম লেখা। কিন্তু তারা বলছেন, এ ব্যাপারে তারা কিছুই জানেন না।

পুলিশ বলছে, তবে কীভাবে তুহিনকে হত্যা করা হয়েছে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার জানা যাবে। তুহিনের পেটে কে বা কারা ছুরি ঢুকিয়েছে ফিঙ্গারপ্রিন্টের প্রতিবেদন পাওয়ার পর সব কিছু বোঝা যাবে।

দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল  বলেন, এ পাঁচজনের বাইরে আর কাউকে এখন পুলিশ সন্দেহ করছে না। তবে তদন্তের অন্যকারো নাম এলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *