April 20, 2024
আন্তর্জাতিক

বিহার ও আসামে বন্যায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

নেপালে থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভারতের বিহারের ১২টি জেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে ভারি বর্ষণের কারণে ব্র²পুত্র নদীর পানি বেড়ে দুকূল উপচে আসমের বেশিরভাগ অঞ্চল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জনজীবন প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।

বিহারে বন্যায় এখন পর্যন্ত ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার জানায় রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজ্যের ৫৫ লাখ মানুষ। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সীতামাড়ী জেলায় ১৮ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে বলে জানায় এনডিটিভি।

এছাড়া, মধুবানিতে ১৪ জন, আরারিয়াতে ১২ জন, শেওহার ও দ্বারভাঙ্গায় নয়জন করে, পুর্নিয়ায় সাতজন, কিষাণগঞ্জে চারজন, সুপাউলে তিনজন এবং ইস্ট চম্বারানে দুইজন মারা গেছেন। এর মধ্যে বৃহস্পতিবারই ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। বন্যা দুর্গতদের জন্য রাজ্যজুড়ে এক হাজার ১১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।

আসাম: আসামে ব্র²পুত্র নদীর পানি বেড়ে বেশিরভাগ এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। সেখানে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৫৪ লাখ মানুষ। বন্যা দুর্গত আসামের বাসিন্দাদের জন্য ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’ হয়ে এসেছে ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স (এনআরসি) এর শুনানি। বন্যার কারণে অনেকে ওই শুনানিতে উপস্থিত থাকতে পারেননি। অবৈধ বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করে তাদের ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যে আসাম সরকার নাগরিকপঞ্জি তৈরির কাজ শুরু করেছে।

২০১৮ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশ করা প্রথম খসড়া তালিকায় মাত্র এক কোটি ৮০ লাখ মানুষের নাম ঠাঁই পায়। যেখানে আবেদন করেছিল তিন কোটি ২৯ লাখ মানুষ। যা নিয়ে নানা বিতর্ক ও সমালোচনার পর ওই বছর জুলাইয়ে দ্বিতীয় খসড়া তালিকা প্রকাশ পায়। তাতেও আবেদনকারী ৪০ লাখ মানুষের ঠাঁই হয়নি।

তালিকায় ঠাঁই না পাওয়া ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র নিয়ে এনআরসি কর্তৃপক্ষের কাছে হাজির হতে বলা হয়। এনআরসি কর্তৃপক্ষকে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আসামের নাগরিকপঞ্জির কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। কর্তৃপক্ষের দাবি, এরই মধ্যে তারা ৯০ শতাংশ কাজ শেষ করে ফেলেছে।

অথচ ভারি বৃষ্টি ও বন্যা কারণে গুরুত্বপূর্ণ শুনানিতে হাজির হতে পারেননি আসামের কালারদিয়া চরের বাসিন্দা ৬০ বছরের বেইলা খাতুন। খসড়া নাগরিকপঞ্জিতে প্রথমে তার নাম ছিল, কিন্তু তার নাম অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আপত্তি উঠায় এনআরসি কর্তৃপক্ষ তাকে শুনানিতে ডেকেছিল। কিন্তু শুনানির দিন ভারি বৃষ্টির কারণে কোনো মাঝি নৌকা নদীতে ভাসাতে রাজি হননি।

বেইলা খাতুন এনডিটিভিকে বলেন, ওই শুনানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু সেদিন এমন বৃষ্টি শুরু হলো যা আমি আগে কখনো দেখিনি। বন্যার পানিও বেড়ে গেল এবং কোনো মাঝি আমাদের পার করতে রাজি হলো না। ফলে আমরা শুনানিতে যেতে পারলাম না। এরপর কী হবে ভেবে আমি আতঙ্কিত।

৪৮ বছরের আবুল হুসাইন তালিকায় স্থান পেলেও তার ছয় সন্তানের কারো নাম তালিকাতে নেই। তারাও বন্যার কারণে শুনানিতে হাজির থাকতে পারেননি। বন্যার কারণে যারা এনআরসি’র শুনানিতে হাজির থাকতে পারেননি তাদের জন্য বিষয়ে ব্যবস্থায় আবার শুনানির আয়োজন করার দাবি করা হয়েছে।

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *